কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মাছ ধরার ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ৩৪৫টি জায়ান্ট কিং ফিশ বা উলুয়া মাছ। স্থানীয় ভাষায় যেটি ‘নাগু মাছ’ নামে পরিচিত। ছোট-বড় মিলিয়ে মাছগুলোর ওজন প্রায় ১১০ টন।। মাছগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০কেজি ওজনের ৫৫টি ও ১১ থেকে ১৭ কেজির ২৬৫টি। মাছগুলো ১৯ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
রবিবার (৩ মার্চ) বিকাল চারটার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বাংলাদেশ জলসীমানার মৌলভীর শীল নামক এলাকায় মাছগুলো ধরা পড়ে। হঠাৎ করে মাছের ঝাঁক ধরা পড়ায় স্থানীয় জেলেদের মুখে হাসি ফুঁটে উঠেছে।
Pause
Unmute
Unibots.in
মাছগুলো ধরা পড়েছে তিন জনের যৌথ মালিকাধীন ‘এমভি দেলোয়ার’ নামের ট্রলারে। পরে তারা মাছগুলো প্রতি কেজি ৪২০ টাকা দামে বিক্রি করেছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে।
ফিশিং ট্রলার এমভি দেলোয়ার ও মোহাম্মদ কাইয়ুমসহ মাঝিমাল্লারা বলেন, রবিবার বেলা ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানার মৌলভীরশীল নামক এলাকায় গিয়ে ট্রলারটি সাগরের পানিতে জাল ফেলতে শুরু করেন। কয়েক ঘন্টা অপেক্ষার পরে বিকালের দিকে মাছের বিশাল ঝাঁকটি জালে আটকা পড়লে ওই এলাকার সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখা যায়। তখন জেলেরা বুঝতে পারেন জালে বড় যেকোনও ধরনের মাছের ঝাঁক আটকা পড়েছে। পরে আশেপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলেই কিছুক্ষণ পরেই নজরে আসে নাগুমাছের ঝাঁক। প্রতিটি মাছের ওজন ৮ থেকে ১০ কেজি ও ১১ থেকে ১৭ কেজি পর্যন্ত। সেখান থেকে ট্রলার মালিককে জানানো হয় মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি।
পরে রাত ৯টার দিকে ট্রলারটি টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিসারি ঘাটে ফেরত আসলে মাছগুলো এক নজর দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায়।পরে ট্রলার থেকে ঝুঁড়িভর্তি করে ট্রলার থেকে মাছগুলো ছৈয়দ আলমের ফিসারিজ ঘাটে মাছগুলো গুনগতমান ভালো রাখতে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
পরে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী জামাল হোসেনসহ আরও অনেকেই প্রতি কেজি ৪২০ টাকা দামে মাছগুলো কিনে নেন।
মাছ ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম ও মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, তারা কয়েকজন মিলে প্রায় ২৬৫ পিস (তিন টন) মাছ কিনেছেন। এসব মাছ তারা ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করবেন। এ মাছের কদর রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের হাট বাজারগুলোতে।
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর। সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মান্য করায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণে এই মাছ ধরা পড়ছে। মাছগুলো চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেতো।’
মৎস্য বিভাগের দাবি, টেকনাফের স্থানীয় একটি ট্রলারে ধরা পড়া ৩৪৫ পিস জায়ান্ট কিংফিশ বা উলুয়া মাছ। তবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এটি নাগুমাছ নামে পরিচিত।
পাঠকের মতামত